প্রশিক্ষণ:
আয়নায়নকারী বিকিরণের নিরাপদ ব্যবহার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এ বিষয়টি অনস্বীকার্য। এখন এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে আয়নায়নকারী তেজস্ক্রিয়তা যে পরিমানেই হোক না কেন তা শরীরে বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়া ঘটিয়ে শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। অর্সকতা বা দুর্ঘটনার কারনে তেজস্ক্রিয়তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করা জরুরী যা এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং জনসাধারণকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২এর সেকশন ৪ আওতায় ১২ ফেব্রূয়ারী ২০১৩ খ্রিঃ হতে এ সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রণ মূলক কার্যক্রমের দায়িত্ব বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (বাপশনিক) উপর ন্যস্ত রয়েছে। আয়নায়ণকারী বিকিরণ সোর্স/যন্ত্রপাতি প্রভৃতি ব্যবহারকারীদেরকে সুষ্ঠুভাবে কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। দক্ষ বিশেষজ্ঞগন সংশ্লিষ্ট কর্মসূচীর সাফল্যের মূল চালিকা শক্তি। বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা-ই হলেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যোগ্য ব্যক্তি, যিনি তেজস্ক্রিয় পদার্থ/সোর্স যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ব্যবহারের সাথে জড়িত ঝুঁকি, আইনগত চাহিদা, বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার দায়িত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে ওয়াকেবহাল থাকবেন।
আইনগত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বাপশনিক বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের জন্য বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত কোর্সের রূপরেখা প্রণয়ন, পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করে। তেজস্ক্রিয় বিকিরণ উৎস/যন্ত্রপাতির নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে ব্যবহারকারীদের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করা এবং মান সম্পন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করার উদ্ধুদ্ধ করে তোলার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে জড়িত কর্মী, তেজস্ক্রিয় উৎস/যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী, নকশাকারী, প্রকৌশলী, পরিচালকবৃন্দের জন্য ১২ই ফেব্রুয়ারী ২০১৩ হতে ৩১ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত ২৫টি প্রশিক্ষণ কোর্সের ব্যবস্থা করেছে। এসব কোর্সের মাধ্যমে এ মোট পর্যন্ত ১১৪১ জন প্রশিক্ষণাথী প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। উল্লেখ্য যে, অক্টোবর ১৯৯২ থেকে জানুয়ারি ২০১৩ সময়কালে তৎকালীন পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, বাপশক কর্তৃক আয়োজিত ১৫১টি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করে ৫৯৪৫ জন প্রশিক্ষনার্থী। সর্বমোট বর্তমানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৭০৯০ জনের মধ্যে বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা আছেন ৪৭৪২ জন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুল আরসিও সনদধারী হচ্ছেন ডায়াগনষ্টিক এক্সরে- ১৭০০ জন এবং ইন্ডাষ্ট্রিয়াল প্রাক্টিস ১৩৭ জন। ১২ই ফেব্রুয়ারী ২০১৩ হতে ৩১ডিসেম্বর ২০১৪ সময়কালে বাপশনিক কর্তৃক পরিচালিত প্রশিক্ষণ কর্মশালাগুলো টেবিল-১ এ উপস্থাপন করা হল।
নিবন্ধীকরণ:
বাপশনিক পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ বিষয় সংক্রান্ত সকল নথি এবং তথ্য নিবন্ধীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য মাধ্যম হতে প্রাপ্ত প্রায় ৩৫০০ বই, জার্নাল এবং রিপোর্ট ইত্যাদি সুরক্ষা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ডেটা বেজের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু শাক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ড সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত দেশী ও বিদেশী এবং আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন বই/জার্নাল এবং বিভিন্ন ধরনের নথিপত্রের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্কমর্তাদের নতুন মূলসনদ দেয়ার লক্ষ্যে Diagnostic X-ray এর প্রতি মাসে ২টি পরীক্ষার এবং Industrial Practice এর বছরে একটি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে মূলসনদ তৈরী করে বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের ঠিকানায় কুরিয়ার করে পাঠানো হয়।